বন্দে আলী মিঞা
তোমারে পাই জ্যোত্স্না রাতের
অলস ঘুমের মাঝে
আমার বাঁশী তোমার হাতে
গভীর সুরে বাজে |
নিখিল ব্যাপি চাহিয়া থাকে
কাজল তব আঁখি
নিজেরে খুঁজি হারাইয়া দিশা
মনেরে হানি ফাঁকি ;
ঊষসী তব সিঁদুর পরে
বলাকা সারি মালিকা গড়ে
তোমারে যাই ধরিতে চাই---
অমনি পাই না যে |
তোমারে পাই শরৎ প্রাতে
শিশির-ছেঁচা ফুলে
নৃত্য তব উছলি উঠে
নদীর কূলে কূলে |
কখনো দেখি বাহিয়া যাও
মেঘের তরীখানি
পাতায় ফুলে দেখেছি কভু
লিখিতে তব বাণী
সাগর তালে বাজাও বীণা
মনেতে জানি এ-সুর চিনা
কখনো তাহা গুঞ্জরেছি
কখনো গেছি ভুলে |
ফাগুন দিনে মাধবী রাতে
যে ছবি তব জাগে
চমকি দেখে --- শিহরি উঠি
পুলক বুকে লাগে---
অশোক শাখে মুছেছে তব
চরণ রাঙা লেখা
আমের নব মঞ্জরীতে
কখনো দেছ দেখা |
শিমূল শাখে আবির খেলি
অঙ্গে ধরি পলাশ চেলী
বধূর বেশে কভুবা এলে
জীবন পূরোভাগে |
নয়ন তব যে-ভাষা ফোটে---
বুঝিতে পারি তায়---
সঁপিয়া দাও রিক্ত করি---
সকল আপনায়,
কাঁপিয়া প্রিয়া যে-গানখানি
তরুণ তব মনে
আমার বুকে তাহার রঙ
লেগেছে অকারণে |
তোমারে পাই সুদূর হ'তে
আগুন-ভরা যে-সুর পথে
সেথায় মোরা রচেছি গেহ
গোপন নিরালায় |
ঝড়ের সাথে এলায়ে কেশ
এসেছ বিরহিনী
তোমারে দেখে জেগেছে মনে
চিনি গো যেন চিনি ;
বরষা রাতে চোখের জলে
হেসেছ' পলাতকা
চখিরে দেখে যেমন করি
হেসেছে ভীরু চখা |
পেয়েছি তোমা জীবন ভরে
নানান রূপে পলক তরে
কখনো হারি খেলার ছলে
কখনো যেন জিনি |
No comments:
Post a Comment