
অক্ষয়কুমার বড়াল ১৮৬০ সালে বর্তমান ভারতের কলকাতার চোরবাগানে এক স্বর্ণব্যবসায়ীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় কলকাতার হেয়ার স্কুলে। স্কুল শিক্ষা তিনি সমাপ্ত করতে পারেননি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশি দূর না এগোলেও আমৃত্যু তিনি জ্ঞান আহরণে ব্রতী ছিলেন। এ হিসেবে তাকে একজন স্বশিক্ষিত মানুষ বলে আখ্যায়িত করা যায়। স্কুল ত্যাগের পর অক্ষয়কুমার দিল্লি অ্যান্ড লন্ডন ব্যাংকের হিসাব বিভাগের কর্মচারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এখানে কয়েক বছর চাকরি করার পর নর্থ ব্রিটিশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে হিসাব সচিব পদে যোগ দেন। এই পদ থেকেই তিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন।
হেয়ার স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায় অক্ষয়কুমার বড়াল বিহারীলাল চক্রবর্তীর কবিতার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। বিহারীলাল ছিলেন বাংলা গীতিকবিতার প্রবর্তক। বিহারীলাল চক্রবর্তীর অনুপ্রেরণায়ই তিনি কবিতা রচনা শুরু করেছিলেন। বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৮৯ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ সংখ্যায় তাঁর প্রথম কবিতা রজনীর মৃত্যু প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অক্ষয়কুমার বড়ালকে "বিহারীলালের সাক্ষাৎ ভাবশিষ্য" নামে আখ্যায়িত করা হয়। বাংলা গীতিকবিতার ইতিহাসে তিনি বড়াল কবি নামে পরিচিত। তার কাব্য রচনার মূল বিষয় ছিল নিসর্গ, সৌন্দর্যবাদ, কল্পনামূলক প্রেম, শোক এবং মানববন্দনা। নারীপ্রেমের শান্তরস তাঁর কাব্যের প্রধান বিশেষত্ব। তিনি মৃতা স্ত্রীর স্মৃতিচারণ করে এষা (১৯১২) কাব্যগ্রন্থটি লিখেছিলেন। তিনি মার্জিত এবং বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারার অনুসারী ছিলেন। তার স্বরচিত গ্রন্থ: প্রদীপ (১৮৮৪), কনকাঞ্জলি (১৮৮৫), ভুল (১৮৮৭),শঙ্খ (১৯১০), এষা (১৯১২), চণ্ডীদাস (১৯১৭) এবং সম্পাদিত গ্রন্থ: রাজকৃষ্ণ রায়ের কবিতা (১৮৮৭) ও গিরীন্দ্রমোহিনী দাসীর অশ্রুমালা (১৮৮৭)।
১৯১৯ সালের জুন ১৯ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সূচী: | |
প্রার্থনা (অক্ষয় কুমার) বঙ্গভূমি শৃঙ্খলমুক্ত শত নাগিনীর পাকে | শোক সান্তনা হৃদয় হৃদয়-শঙ্খ |
No comments:
Post a Comment