কবি-পরিচিতি কবি মুন্সী কায়কোবাদ এর আসল নাম মহম্মদ কাশিম-আল-কুরেশী | তিনি ১৮৫৭ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জের আগলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন | তাঁর বাবা শাহামতুল্লা আলী কুরেশী ঢাকার জেলা আদালতে উকিল ছিলেন | তিনি ঢাকাতে পোগজ স্কুল এবং সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে অধ্যয়ন করেন। তারপর তিনি ঢাকা মাদ্রাসাতে ভর্তি হন। সেখানে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষার পূর্ব পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নেননি। পরে তিনি পোস্টমাস্টারের চাকরি নিয়ে নিজ গ্রামে ফিরে যান। সেখানে তিনি অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত কাজ করেছেন। বাল্যাবস্থা থেকেই তাঁর কবিতার পারদর্শিতা চোখে পড়ে | ১৮৭০ সালে, মাত্র ১৩ বছর বয়সেই প্রথম কাব্য গ্রন্থ 'বিরহবিলাপ' প্রকাশিত হয় | তাঁর অন্যান্য কাব্য গ্রন্থের মধ্যে কুসুমকানন (১৮৭৩), অশ্রুমালা (১৮৯৫), শিবমন্দির (১৯২২), মহাশ্মশান (১৯০৪), অমিয়ধারা (১৯২৩) উল্লেখনীয় | মরণোত্তর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে আছে প্রেমের ফুল (১৯৭১), প্রেমের বাণী (১৯৭০), প্রেম পারিজাত (১৯৭০), মন্দাকিনী ধারা (১৯৭১) এবং গাউছ পাকের প্রেমের কুঞ্জ (১৯৭৯) | মহাশ্মশান হচ্ছে তার মহাকাব্য। এটি তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ অবলম্বনে রচিত। এটাকে তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৯৩২ সালে তিনি কলকাতার বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলনের পৌরহিত্য করেন | নিখিল ভারত সাহিত্য সংঘ থেকে তাঁকে কাব্যভূষণ, বিদ্যাভূষণ এবং সাহিত্য রত্ন পুরস্কারে ভূষিত করেন |কবি হেমচন্দ্র ব্যানার্জী এবং কবি নবীন চন্দ্র সেন এর দ্বারা তিনি প্রভাবিত হয়েছিলেন কিন্তু অনেকের মতে, তাঁদের মত তিনি সাম্প্রদায়ীক ভেদবুদ্ধির পরিচয় দেন নি | তাঁর কাছে হিন্দুও বীর, মুসলমানও বীর | মুসলমানদের মধ্যে পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে তাঁদের হৃত গৌরবের কথা পৌঁছে তাঁদের উন্নতি সাধনে উদ্বুদ্ধ করাই তাঁর প্রধাণ প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে ।
কবি ২১ জুলাই, ১৯৫১ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
সূচী: | |
আযান কে তুমি দেশের বাণী প্রণয়ের প্রথম চুম্বন প্রার্থনা (কায়কোবাদ) | প্রেম-প্রতিমা বঙ্গভূমি ও বঙ্গভাষা বাংলা আমার বিদায়ের শেষ চুম্বন সায়াহ্নে |
No comments:
Post a Comment