শারদ-তরঙ্গিণী

কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার

একদিন এ সময় তরঙ্গিনী-তীরে,
চলিলাম চিন্তাকুল চিতে ধীরে ধীরে |
তটিনীর তটপরি সিকতা-আসনে,
বসিলাম ভাবময়ী কল্পনার সনে।
তরঙ্গিণী-তনু তনু শারদাগমনে,
নিরখি নয়নে আমি নিরখি নয়নে;
সুধালেম "অয়ি কলস্বরা স্রোতস্রতি!
আজ কেন তোমা হেরি দীনা ক্ষীণা অতি?
বরষার সময়জ প্রভাবনিচয়,
কেন কেন কেন আজ দৃশ্য নাহি হয়?
তরঙ্গিণী! কোথা তব তরঙ্গের রঙ্গ,
হেরি যাহা, পোতারহী পাইত আতঙ্ক?
যে সকল লহরী, করিয়া ঘোর স্বন,
তরণীর হৃদয় করিত বিদারণ,
কোথা তাহা? কোথা সেই দ্রুতগামী নীর
চলিত যা মদগর্বে অতিক্রমি তীর?
কূলস্থ বিহঙ্গাশ্রম মহীরুহগণ
করিত তাদের কোপে মূল উন্মূলন!
অয়ি ধুনি! কোথা তব সেই মহাধ্বনি,
ভয় জন্মাইত মেন যার প্রতিধ্বনি?''
শুনিয়া আমার ভাষ অতি কলস্বরে,
তরঙ্গিণী উত্তর করিলা তদন্তরে---
"শুনহে হে ভাবুক! এই জানিবে নিশ্চয়,
চিরদিন একদশা কাহারো না রয় |"

No comments:

Post a Comment